সফিকের ইদ - হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো বাংলা ফানি ভিডিও | Sofiker Eid Funny Natok 2024

সফিকের ইদ | Sofiker Eid | Musfiq R. Farhan | Bangla Funny Video | New Eid Natok 2024

Sofiker Eid | Musfiq R. Farhan | Keya Payel সফিকের ইদ | বাংলা ফানি ভিডিও ২০২৪

ভূমিকা: কোরবানির গরু এবং সফিকের মহাযুদ্ধ

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। আর কোরবানির ঈদ হলে তো কথাই নেই! এই ঈদের আনন্দের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে কোরবানির পশু কেনা। কিন্তু এই পশু কেনা যে কত বড় একটা যুদ্ধক্ষেত্র হতে পারে, তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন। আমাদের গল্পের নায়ক সফিক (মুশফিক আর ফারহান), সহজ সরল এক যুবক, যে কিনা এই বছর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিজের টাকায় একাই একটা গরু কোরবানি দেবে। তার এই মহান উদ্দেশ্যের পেছনে রয়েছে প্রেমিকা রিমির (কেয়া পায়েল) কাছে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করার এক তীব্র আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু সফিকের পকেটের অবস্থা আর গরুর বাজারের দামের মধ্যে যে আকাশ পাতাল তফাৎ, সেটাই গল্পের মূল রসদ। "সফিকের ইদ" হলো হাসি, ঠাট্টা, বিড়ম্বনা এবং চূড়ান্ত নাটকীয়তায় ভরা এক যুবকের গরু কেনার শ্বাসরুদ্ধকর কিন্তু মজাদার এক অভিযানের গল্প, যা দেখতে দেখতে আপনি হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে পড়েও যেতে পারেন!

প্রথম পর্ব: বড় গরুর স্বপ্ন আর ভাঙা পকেটের হাহাকার

গল্পের শুরুতেই দেখা যায় সফিক তার বন্ধুদের চায়ের দোকানে বসে বিশাল এক গরু কেনার পরিকল্পনা করছে। তার ভাবখানা এমন যেন সে পুরো গরুর হাট কিনে ফেলার ক্ষমতা রাখে। বন্ধুদের সামনে সে বুক ফুলিয়ে বলছে, "দোস্ত, এইবার এমন গরু কিনব, এলাকার মানুষ দেইখা হাঁ কইরা তাকায়া থাকব!" তার এমন ভাব দেখে বন্ধুরা হাসাহাসি করলেও সফিক তার সিদ্ধান্তে অটল। কারণ, তার প্রেমিকা রিমি তাকে শর্ত দিয়েছে, যদি সে একা একটা গরু কিনে দেখাতে পারে, তাহলেই কেবল তাদের বিয়ের ব্যাপারে পরিবারকে জানাবে। ভালোবাসার জন্য মানুষ কত কী করে, সফিক না হয় একটা গরুই কিনবে!

কিন্তু স্বপ্নের জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরতেই সফিকের মাথায় হাত! তার সারাজীবনের জমানো টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের একটা ছাগল কেনাই দায়, সেখানে আস্ত একটা গরু! সে তার বসকে অনুরোধ করে ঈদের বোনাসটা একটু বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু বস তাকে মুখের ওপর না করে দেন। বাবার কাছে টাকা চাইতে গেলে বাবা উল্টো তাকে শোনান, "যেই মুরগি নিজে ডিম পাড়তে পারে না, তার আবার ফুটানি কিসের?" চতুর্দিক থেকে निराश হয়ে সফিক সিদ্ধান্ত নেয়, যেমন করেই হোক, বাজেটের মধ্যেই সে সেরা গরুটা কিনেই ছাড়বে। এভাবেই বুক ভরা আশা আর পকেট ভরা হতাশা নিয়ে সফিক তার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, অর্থাৎ গরুর হাটের দিকে রওনা হয়।

দ্বিতীয় পর্ব: গরুর হাটের গোলকধাঁধায় সফিকের অভিযান

গরুর হাটে প্রবেশ করেই সফিকের চোখ ছানাবড়া! সারি সারি গরু, বিক্রেতাদের হাঁকডাক আর কাদা মাটির গন্ধে সফিকের মাথা ঘুরতে শুরু করে। সে এক গরুর কাছে গিয়ে দাম জিজ্ঞেস করতেই বিক্রেতা এমন এক দাম হেঁকে বসে, যা দিয়ে একটা ছোটখাটো দ্বীপ কেনা সম্ভব। সফিক: (ভয়ে ভয়ে) "ভাই, এইটার দাম কত?" বিক্রেতা: (রাজকীয় ভঙ্গিতে) "দাম দিয়া কী করবেন? আগে কলিজাটা দেখেন, বাঘের মতো কলিজা! এক্কেবারে খাঁটি ইন্ডিয়ান!" সফিক অবাক হয়ে ভাবে, গরু কিনতে এসে সে কি বাঘের কলিজা কিনবে নাকি!

সে হাটজুড়ে ঘুরতে থাকে আর একের পর এক विचित्र অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এক বিক্রেতা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে তার চিকনা চাকনা গরুটাই নাকি আসল ফিট গরুর লক্ষণ, কারণ এটা "ডায়েট করে"। আরেকজন তার গরুর গুণের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলে, এই গরু নাকি দিনে দশ লিটার দুধ দেয়, যদিও সেটা ছিল ষাঁড়! এই সব অদ্ভুত চরিত্র আর তাদের অদ্ভুত যুক্তির ফাঁদে পড়ে সফিকের অবস্থা তখন হাসফাঁস। সে বুঝতে পারে, এই হাটে গরু কেনা আর কুমিরের সাথে যুদ্ধ করা একই ব্যাপার। এরই মধ্যে সে এক চালাক দালালের খপ্পরে পড়ে, যে তাকে কম দামে "অরিজিনাল অস্ট্রেলিয়ান" গরু কিনে দেওয়ার লোভ দেখায়। সফিক কি পারবে এই দালালের ফাঁদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে?

তৃতীয় পর্ব: দালালের চক্রান্ত এবং অপ্রত্যাশিত বিপদ

সেই ধূর্ত দালাল, মফিজ, সফিককে হাটের এক কোণায় নিয়ে যায়। সেখানে আসলেই একটা বেশ নাদুসনুদুস গরু বাঁধা ছিল। মফিজ ফিসফিস করে বলে, "মালিকের খুব টাকার দরকার, তাই পানির দামে দিয়া দিতাছে। আপনে খালি পঞ্চাশ হাজার বায়না করেন, বাকিটা গরু নিয়া যাওয়ার সময় দিবেন।" সফিক গরুর চেহারা দেখে আর কম দামের কথা শুনে মুহূর্তেই গলে যায়। সে তার জমানো টাকার প্রায় পুরোটাই মফিজের হাতে তুলে দেয়। মফিজ টাকা নিয়ে বলে, "আপনি এখানে দাঁড়ান, আমি মালিকরে নিয়া আসতেছি।"

ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়, কিন্তু মফিজ বা গরুর মালিক কারোই দেখা নেই। সফিকের মনে ধীরে ধীরে সন্দেহের মেঘ জমতে শুরু করে। ঠিক তখনই আসল গরুর মালিক এসে সফিককে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাগী গলায় জিজ্ঞেস করে, "ভাই, আমার গরুর সামনে এমনে খাড়ায়া রইছেন ক্যান? গরু পছন্দ হইছে?" সফিক উত্তেজিত হয়ে বলে, "পছন্দ মানে! আমি তো বায়নাও করে ফেলেছি।" এই কথা শুনেই মালিকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি জানান, তিনি কাউকে গরু বিক্রিও করেননি, আর কোনো দালালকেও দায়িত্ব দেননি। সফিক বুঝতে পারে যে সে খুব বাজেভাবে প্রতারিত হয়েছে। তার মাথায় যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়! গরু কেনার স্বপ্ন, রিমির ভালোবাসা, সব কিছু এক মুহূর্তে ধুলোয় মিশে যেতে দেখে সে কান্নায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়।

চতুর্থ পর্ব: শেষ চেষ্টা এবং এক মানবিক মোড়

প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে সফিক যখন হাটের এক কোণায় বসে কাঁদছিল, তখন এক বৃদ্ধ বিক্রেতা তার কাছে এগিয়ে আসেন। তিনি সফিকের সব কথা মন দিয়ে শোনেন। বৃদ্ধ লোকটি ছিলেন একজন সৎ এবং দয়ালু মানুষ। তিনি সফিককে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, "বাবা, মন খারাপ কইরো না। আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন।" এরপর তিনি নিজের পাল থেকে একটি ছোট কিন্তু সুস্থ সবল গরু দেখিয়ে বলেন, "আমার এই গরুটা তুমি নিয়া যাও। তোমার কাছে যা আছে, তাই দিয়ো। ঈদের দিন একটা পোলা মনের দুঃখে বাড়ি ফিরব, এইটা আমি দেখতে পারুম না।"

সফিকের চোখে তখন কৃতজ্ঞতার জল। সে ভাবতেও পারেনি যে এই কঠিন সময়ে কেউ এভাবে তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। সে তার পকেটে থাকা সামান্য কিছু টাকা বৃদ্ধের হাতে তুলে দেয়। বৃদ্ধ হাসিমুখে টাকাটা গ্রহণ করেন এবং সফিককে দোয়া করে দেন। সফিক ছোট গরুটা পেয়েও ভীষণ খুশি হয়, কারণ এই গরুর সাথে জড়িয়ে ছিল সততা আর মানবিকতার এক অসাধারণ গল্প। সে বুঝতে পারে, কোরবানির আসল উদ্দেশ্য পশু কত বড় বা দামি, তা নয়, বরং এর পেছনের ত্যাগ এবং আল্লাহকে খুশি করার নিয়তটাই আসল। সফিক: (গরুর গলায় হাত বুলাতে বুলাতে) "তুই ছোট হইতে পারিস, কিন্তু আমার কাছে তুই-ই সেরা।"

শেষ পর্ব: ভালোবাসার জয় এবং হাসিমুখের ঈদ

সফিক যখন ছোট গরুটা নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়, তার মনে এক ধরনের অজানা ভয় কাজ করছিল। রিমি হয়তো এই ছোট গরু দেখে তাকে ফিরিয়ে দেবে! কিন্তু বাড়ির কাছে পৌঁছাতেই সে দেখে রিমি তার জন্য অপেক্ষা করছে। সফিক মাথা নিচু করে সব ঘটনা খুলে বলে। রিমি সব শুনে হাসে, তবে সেই হাসিতে কোনো তাচ্ছিল্য ছিল না, ছিল গভীর ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা। সে সফিকের হাত ধরে বলে, "তুমি কত বড় গরু কিনেছ, সেটা আমার কাছে কোনো ব্যাপারই না। তুমি যে এতকিছুর পরেও সততার পথ ছাড়োনি এবং একটা অসহায় মানুষের মতো ভেঙে পড়োনি, এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমি তোমাকেই চাই, তোমার কেনা গরুর সাইজকে না।"

প্রেমিকার মুখে এই কথা শুনে সফিকের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে, সত্যিকারের ভালোবাসা বাহ্যিক কোনো কিছুর ওপর নির্ভর করে না। নাটকের শেষে দেখা যায়, সফিক, রিমি এবং তাদের পরিবার হাসিমুখে সেই ছোট গরুটিকে নিয়েই ঈদের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের হাসিমুখই বলে দিচ্ছিল, সফিকের ঈদটা সত্যিই সার্থক হয়েছে। যে ঈদ শুরু হয়েছিল বড় গরু কেনার এক হাস্যকর প্রতিযোগিতা দিয়ে, তা শেষ পর্যন্ত সততা, মানবিকতা এবং সত্যিকারের ভালোবাসার এক অসাধারণ উৎসবে পরিণত হয়।

সফিকের গরু কেনার এই হাসির অভিযানের গল্পটি আপনার কেমন লাগলো? আপনি কি মনে করেন, উৎসবের আড়ম্বরের চেয়ে তার পেছনের মানবিকতা আর সততাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আপনার মূল্যবান মতামত নিচের কমেন্ট বক্সে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার প্রতিটি মন্তব্যই আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা!

ডিসক্লেমার: এই গল্পটি নাটকের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে একটি কল্পিত রচনা। থাম্বনেইলটি শুধুমাত্র তথ্য পরিবেশনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.