Tomader Golpo Natok (তোমাদের গল্প) - Jovan & Totini | New Eid Natok 2025 | Full Story
Tomader Golpo | Farhan Ahmed Jovan | Tanjim Saiara Totini তোমাদের গল্প | New Eid YouTube Film 2025
code Code download content_copy expand_lessভূমিকা: শিকড়ের টানে ভালোবাসার এক নতুন গল্প
শহরের ব্যস্ততা আর আধুনিক জীবনের চাপে আমরা যখন প্রায় ভুলতে বসেছি সম্পর্কের সেই পুরোনো উষ্ণতা, যৌথ পরিবারের সেই মধুর খুনসুটি আর নির্মল ভালোবাসার গল্প, ঠিক তখনই আমাদের সেই স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দিতে এলো এক অসাধারণ নির্মাণ—"তোমাদের গল্প"। এই গল্প শুধু দুটি মানুষের ভালোবাসার নয়, বরং এটি একটি গোটা পরিবারের একসঙ্গে হাসা, কাঁদা এবং একে অপরকে আগলে রাখার গল্প। ফারহান আহমেদ জোভান এবং তানজিম সাইয়ারা তোতিনী অভিনীত এবং মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত এই ইউটিউব ফিল্মটি দর্শকদের এক নির্মল আবেগের জগতে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে, যেখানে সম্পর্কের শিকড়ই হলো সবচেয়ে বড় শক্তি।
প্রথম পর্ব: শহরে বেড়ে ওঠা রাতুলের গ্রামে ফেরা
গল্পের নায়ক রাতুল (ফারহান আহমেদ জোভান), শহরের কর্মব্যস্ত জীবনে অভ্যস্ত এক আধুনিক যুবক। ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবার সঙ্গে ছুটি কাটাতে সে পাড়ি জমায় গ্রামের বাড়িতে। তার কাছে এই গ্রাম্য পরিবেশ, যৌথ পরিবারের কোলাহল কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও, দাদী (দিলারা জামান) এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের ভালোবাসায় সে ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিতে শুরু করে। রাতুলের কাছে সবচেয়ে বড় বিস্ময় হয়ে আসে তার চাচাতো বোন তুলি (তানজিম সাইয়ারা তোতিনী)। ছোটবেলায় দেখা সেই লাজুক মেয়েটি এখন দুষ্টু ও প্রাণবন্ত এক তরুণী, যার সারল্য আর মিষ্টি ব্যবহারে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।
তুলির সারাদিনের খুনসুটি, বাড়ির ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তার দায়িত্ববোধ এবং পরিবারের সবার প্রতি তার আন্তরিকতা রাতুলের শহুরে মনকে নাড়া দিয়ে যায়। তুলি রাতুলকে গ্রামের সেই সবুজ প্রকৃতি, পুকুরঘাট আর যৌথ জীবনের ছোট ছোট আনন্দের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়। একদিকে রাতুলের আধুনিক মানসিকতা, অন্যদিকে তুলির গ্রাম্য সরলতা—দুজন সম্পূর্ণ ভিন্ন জগতের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে এক মিষ্টি বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা ধীরে ধীরে এক অব্যক্ত ভালোবাসার দিকে মোড় নিতে থাকে।
দ্বিতীয় পর্ব: খুনসুটি থেকে ভালোবাসার প্রথম শিহরণ
ঈদের চাঁদ দেখার রাত থেকে শুরু করে ঈদের দিনের সকাল পর্যন্ত, বাড়ির প্রতিটি মুহূর্ত হয়ে ওঠে আনন্দ আর উৎসবমুখর। পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে রান্না করা, গল্প করা আর ছোটদের হইচই এই সবকিছু রাতুলের একঘেয়ে জীবনে এক নতুন রঙের ছোঁয়া দেয়। তুলির সঙ্গে তার দুষ্টুমিভরা ঝগড়াগুলোই তাদের অজান্তে কাছে নিয়ে আসে। যেমন, তুলির বানানো পায়েসে লবণ বেশি হওয়া নিয়ে রাতুলের ঠাট্টা করা, আবার সেই রাতুলকেই লুকিয়ে লুকিয়ে সেই পায়েস খেতে দেখে তুলির মিষ্টি হাসি এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই তাদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়াতে থাকে।
একদিন বাড়ির ছাদে সবাই মিলে আড্ডা দেওয়ার সময় হঠাৎ বৃষ্টি নামে। সবাই তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমে গেলেও, রাতুল আর তুলি বৃষ্টির পানিতে ভিজতে থাকে। সেই বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে তারা প্রথমবার নিজেদের মনের ভেতরের অনুভূতিটা উপলব্ধি করে। কিন্তু মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে পারে না। রাতুল বুঝতে পারে, শহরের যান্ত্রিক জীবনের বাইরেও এক নির্মল ভালোবাসার জগৎ আছে, যার নাম তুলি। আর তুলি খুঁজে পায় তার স্বপ্নের সেই মানুষটিকে, যে তার সরলতাকে সম্মান করে। তাদের এই unspoken chemistry গল্পের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়।
তৃতীয় পর্ব: পারিবারিক বন্ধন ও সামাজিকতার চাপ
যখন রাতুল এবং তুলির সম্পর্কটা একটা সুন্দর পরিণতির দিকে এগোতে থাকে, তখনই তাদের সামনে এসে দাঁড়ায় কিছু সামাজিক বাস্তবতা। যৌথ পরিবারে যেমন ভালোবাসা থাকে, তেমনই থাকে কিছু অলিখিত নিয়ম আর প্রত্যাশা। তাদের এই মেলামেশা পরিবারের মুরব্বিদের চোখ এড়ায় না। কেউ এটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়, আবার কেউ কেউ ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তিত হয়ে পড়েন। বিশেষ করে, গ্রামের কিছু আত্মীয়স্বজন তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষা শুরু করে, যা তুলির জন্য এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।
রাতুল এই পরিস্থিতিটা বুঝতে পারে এবং তুলিকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে। সে পরিবারের সবার সামনে নিজের দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয় এবং বুঝিয়ে দেয় যে, সে তুলির প্রতি কতটা আন্তরিক। সে শুধু তুলির হাত ধরতে আসেনি, বরং এই গোটা পরিবারটার দায়িত্ব নিতে চায়। জোভানের পরিপক্ব অভিনয় এবং তোতিনীর নিষ্পাপ অভিব্যক্তি এই পর্বের দৃশ্যগুলোকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। তাদের ভালোবাসা কোনো ঝড়ের মুখে নয়, বরং পরিবারের সবার আশীর্বাদ নিয়েই পূর্ণতা পেতে চায়।
শেষ পর্ব: ভালোবাসার জয় এবং শিকড়ের কাছে প্রত্যাবর্তন
নাটকের ক্লাইম্যাক্সে রাতুলের ছুটি শেষ হয়ে আসে এবং তার শহরে ফিরে যাওয়ার সময় হয়। পুরো বাড়িতে এক বিষাদের ছায়া নেমে আসে, বিশেষ করে তুলির মন ভেঙে যায়। সে ভাবে, শহরে ফিরে গেলে রাতুল হয়তো তাকে আর এই পরিবারকে ভুলে যাবে। কিন্তু রাতুল সবাইকে অবাক করে দিয়ে এক দারুণ সিদ্ধান্ত নেয়। সে শুধু তুলিকে ভালোবাসার কথা জানায় না, বরং পরিবারের সবার সামনে তার দাদীর কাছে তুলির হাত চেয়ে বসে।
সে জানায়, সে তার ব্যবসাকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত করতে চায় এবং এই শিকড় ছেড়ে সে আর কোথাও যাবে না। রাতুলের এই সিদ্ধান্তে পরিবারের সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। নাটকের শেষে দেখা যায়, পুরো পরিবার মিলে তাদের দুজনের মিলনকে আশীর্বাদ করছে। যে গল্প শুরু হয়েছিল এক যুবকের গ্রামে ফেরা দিয়ে, তা শেষ পর্যন্ত ভালোবাসার শক্তিতে গোটা পরিবারকে এক সুতোয় বেঁধে রাখার এক অসাধারণ উপাখ্যানে পরিণত হয়। "তোমাদের গল্প" শুধু দুটি হৃদয়ের মিলন নয়, এটি প্রতিটি পরিবারের গল্প, যা আমাদের শেখায়—দিন শেষে আপন মানুষ আর সম্পর্কের উষ্ণতার চেয়ে বড় কিছু নেই।
ডিসক্লেমার: এই গল্পটি নাটকের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে একটি দর্শক পর্যালোচনা মাত্র। থাম্বনেইল এবং ছবি শুধুমাত্র তথ্য পরিবেশনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।

 
 
 
 
 
             
 
 
রাতুল ও তুলির এই নির্মল ভালোবাসার গল্প এবং পারিবারিক বন্ধনের এই অসাধারণ উপস্থাপন আপনার কেমন লাগলো? আপনি কি মনে করেন, আধুনিক যুগেও যৌথ পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম? আপনার মূল্যবান মতামত নিচের কমেন্ট বক্সে আমাদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার প্রতিটি মন্তব্যই আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা!